www.bing.com। সার্চ ইন্জিনের রাজা গুগল কে টেক্কা দিতেই মাইক্রোসফটের এই প্রচেষ্টা। আশি শতাংশ মানুষ তাদের সার্চের জন্য গুগল ব্যব হার করেন। অপর দুই প্রতিদ্বন্দী ছিল ইয়াহু আর মাইক্রোসফটের লাইভ সার্চ। গুগলের অতিদ্রুত relevant তথ্য এনে দেয়ার ক্ষমতায় তারা মার্কেট আরও হারাতে বসেছিল।আর সব মার্কেটেই পারা যাক না যাক নাক গলানোর চেষ্টা মাইক্রোসফটের পুরনো স্বভাব। এ স্বভাব থেকেই বিং এর সৃষ্টি।আর সত্য বলতে কি বিং ব্যবহার করেআমার মনে হয়েছে বিং গুগলের যোগ্য প্রতিদ্বন্দী হতে পারে।
সাইটিতের কমলা রংয়ের ব্যব হার দেখা যায়।১নং ছবিতে দেখুন। রংটি চোখ পড়ে।তার মানে কোন ওয়েবসাইটে যদি বিং সার্চের অপশন থাকে, আপনার চোখে পড়বে তার নির্ঘাত। বিং এর হোমপেজটিতে সবসময় একটা ছবি ফিচার করা থাকে। আর থাকে ছোট ছোট জ্ঞানের টুকরো যা লাইভ সার্চের বৈশিষ্ট্য ছিল।আপনি কারসর টি ছবির উপর ঘোরালেই দেখতে পাবেন বর্গাকৃতির টুকরোগুলো ভেসে উঠছে। ছবির কারণেই নাকি জানিনা কিন্তু আমার মনে হয়েছে গুগলের চেয়ে বিং লোড হতে ২ ৩ সেকেন্ড সময় বেশি নেয়। কিন্তু তিন সেকেন্ডের জন্য আমি যদি নতুন কিছু জানতে পারি তাহলে তো ভালই হয়।
এবার আমরা সার্চদেয়া শুরু করব। বিং আর গুগলের হোমপেজে ফিচারড ট্যাবস মোটামুটি একই। সার্চ, ইমেজ, ভিডিও, শপিং, ম্যাপস নিত্যপ্রয়োজনীয় এসব।নিচে মূলত এসবনিয়ে আলোচনা করা হল এবং সব টপিকেই গুগলের সাথে তুলনা করা হল- ধরুন আমি সার্চ দিলাম আমার প্রিয় ইতালিয়ান মডেল মোনিকা বেলুচ্চির নামে।bing, গুগল দুটোই অতি দ্রুত মোনিকা বেলুচ্চির 'খবর' এনে দেয়।সাথে কিছু ছবিও থাকে।
কিন্তু আপানি ছবি থেকে খেয়াল করুন (২) বামপাশে আরও বেশ কিছু ফিচার আপনাকে দেয় যা গুগল দেয়না। আপনি তার বায়োগ্রাফি, উক্তি, তার ওয়ালপেপার-পোস্টার চট করে পেয়ে যেতে পারছেন।গুগলে সে সুবিধা নেই। আপনি তার নামে সার্চ করে হয়ত শুধু ছবি আর বেশ কিছু তথ্য পাবেন-অতিদ্রুত আর মোটামুটি আপডেটেট।কিন্তু বাকিটা আপনাকেই খুঁজে বের করতে হবে। বিং এর ফিচার আপনাকে তথ্য পেতে ও সাজাতে আরও সাহায্য করবে।একটা ফিচার আপনি নিচে দেখছেন(লাল সার্কেল দিয়ে আমি মার্ক করে রেখেছি) লেখা-এক্স র্যাংক। এটা হল আপনি যে বিষয়ে খুঁজছেন সে বিষয়ে অন্যরা কি খুঁজছে তার একটা পেজ। ওতে আপনি পপুলার ছবি থেকে শুরু করে অন্যদের খোঁজার বিষয়, পপুলারিটি গ্রাফ সবই কাজে লাগবে। এটা নিশ্চিত কাজের একটা জিনিস। আপনি ধরুন জানতে চান টেকনোলজির বিষয়ের নতুন কি এসেছে। আপনি এক্স র্যাংক থেকে আজকালকার হাইপগুলো নিয়ে জানতে পারবেন। তার উপর ডানপাশে দেখুন ইমেজ সার্চ এ গুগল আর বিং মোটামুটি একই। বিভিন্ন সাইট থেকে আপনাকে ফোটো শো করবে। যা বেশ relevant। পার্থক্য হল বিং এক পেজেই একের পর এক ছবি লোড আসতে থাকে।আর গুগলে একপেজে কিছু লোড হয়। বাকিগুলো অন্য পেজে। আপনাকে পেজ থেকে পেজে যেতে হবে। আপনি যদি শুধু ইমেজ নিয়েই ব্যস্ত থাকেন তাহলে বিং এর ইমেজ সার্চ কষ্ট কমাবে।কিন্তু ধরুন আপনি মাল্টিপল ওয়েবপেইজ ব্রাউজ করছেন।তাহলে যতক্ষণ আপনি লোডিং স্টপ করাচ্ছেন বিং একের পর এক ইমেজ লোড করেই যাবে। যা আপনার ব্রাউজিং স্পিড কমিয়ে দিতে পারে।
এবার আসা যাক ভিডিও নিয়ে। ভিডিও ফিচারটা আমি বিং এর অসাধারণ।
ধরুন আমি সার্চ দিলাম টম হ্যাঙ্কস এর sleepless in Seattle মুভির জন্য। এর অনেকগুলো ক্লিপস ডিসপ্লে তে আসবে। মজার ব্যাপার হল ক্লিপস গুলো আপনি কারসর ঘুরিয়ে বিং এর পেজ থেকেই দেখতে পারবেন।তবে পর্ণো ওয়েবসাইটরা এর আপত্তি জানিয়েছে। কারণ তাতে লোকজন ওদের ওয়েবসাইটে না গিয়ে বিং থেকেই পর্ণো ক্লিপস দেখে নিতে পারছে। বোধ করি মাইক্রোসফটেরও এটাই উদ্দেশ্য ছিল।
শপিং এর ক্ষেত্রে গুগল আর বিং মোটামুটি একই রকম রেজাল্ট দেয়। প্রাইস রেন্জ, বিভিন্ন রিটেইল স্টোর এর ঠিকানা সবই আছে। বিং এ বাড়তি সুবিধা বলতে এর ক্যাশ ব্যাক অফার।
আপনি যদি ক্যাশব্যাক সিল দেয়া লিংক থেকে কিছু কেনেন তাহলে আপনি একটি ডিসকাউন্ট পাবেন(৪ নং)।
বাংলাদেশি নাগরিকদের জন্য বোধ হয় এসব তেমন গুরুত্বপূর্ণ ব্যাপার না। অনলাইন থেকে কয়জনই বা কেনা কাটা করেন এদেশে। কিন্তু রিসেশনে আক্রান্ত বিলাত আমেরিকার লোকজন কাছে এটা নিশ্চিতভাবেই লোভনীয়।
ম্যাপিং নিয়ে আমি খুব বেশি পার্থক্য দেখিনা। কারণ বাংলাদেশে ম্যাপ টুডিতে কোন সাইট ই ভালো ডিটেলস দেয়ানা।আর থ্রিডিতে ম্যাপ লোড হতে অনেকসময় নেয়। ম্যাপ হিসেবে সার্চের ম্যাপ থেকে গুগল আর্থ নামের আলাদা সফটওয়্যারটি আমি অনেক পছন্দ করি।তবে চট করে কিছু জানতে গেলে যেকোন একটি সাইটেই আপনি যেতে পারেন। মজার ব্যাপার হল, গুগল ম্যাপিং এ সম্প্রতি একটি ফিচার যুক্ত হয়েছে। সেটি হল create your own map। মানে আপনার এলাকায় কোন ফিচার বাদ গেছে মনে হলে আপনি অন্য ম্যা্পা্রদের সাথে যোগযোগ করে নিজেই ম্যাপ তৈরীতে অংশগ্রহণ করতে পারেন।
তো এই হল মাইক্রোসফট বিং। যাকে তারা বলছেন-Its not a search engine, its a DECISION engine. ওরা আপনাকে এমনভাবে তথ্য উপস্হাপন করবে যেন আপনার যেকোন বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেয়া স হজতর ও দ্রুততর হয়। সত্যি বলতে কি আমি মনে করি বিং টিম এতে অনেকাংশে সফল হয়েছে। এটি সত্যি একটি ডিসিশন ইন্জিন।জানিনা গুগল থেকে মার্কেট নেয়া বিং এর জন্য সম্ভব হবে কিনা। কিন্তু এটি যে গুগলের শক্ত প্রতিদ্বন্দ্বী সেটি না মেনে উপায় নেই।
--------------------------------------------------------------------------------------------------------------------------------------
*যদি আপনি বিং এর বিভিন্ন ফিচার নিয়ে ভিডিও দেখতে চান তাহলে চলে আসুন নিচের ওয়েবসাইটে-সম্পূর্ণ বাংলা আমি ভিডিওটি তৈরী করেছি.